রনি মোহাম্মদ,পর্তুগাল: বেইমানির কথা বললেই মুসলিমদের নাম
আগে আসে, কারণ মীরজাফরের
চেয়ে বড় বেইমান বাংলার ইতিহাসে এখনো হয়ত পাই না। এ এক বিরাট
ঐতিহাসিক বিভ্রান্তি, যা খণ্ডন করার দরকার আছে। সবাই সব সময় মীরজাফরকেই একচেটিয়া দোষ
দিয়ে দেয়, কিন্তু আড়াল করে যায় প্রকৃত সত্যকে। ইতিহাস বলে, মীরজাফর কখনোই মূল বিশ্বাসঘাতক
ছিলো না। বরং মীরজাফর ছিলো বিশ্বাসঘাতকদের বানানো একটা পুতুল (যার নিজের কোন যোগ্যতা
ছিলো না), যখনই তার দ্বারা বিশ্বাসঘাতকদের স্বার্থ উদ্ধার হয়েছে, তখনই তাকে ছুঁড়ে ফেলে
দিয়েছে বিশ্বাসঘাতকরা। বেরিয়ে এসেছে প্রকৃত চক্রান্তবাজদের চেহারা। ইতিহাসে মীরজাফরের
আবির্ভাব ঘটেছিলো অনেক পড়ে। নবাব সিরাজ-উ-দৌলাকে যে সরাতে হবে তার প্ল্যান অনেক আগেই
করেছিলো তিন হিন্দু বিশ্বাসঘাতক জগৎশেঠ, উমিচাঁদ ও রাজবল্লভ মিলে। পলাশীর প্রান্তরে
নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মূল কারণ শুধু মীর জাফরের বেঈমানী না মূল কারণ ছিলো ঐ সময়কার
হিন্দুদের বেঈমানী। উল্লেখ্য, ইতিহাস থেকেই জানা যায় সে সময় মুসলমানরা হিন্দুদের কাছে
তাদের অর্থনীতির দায়িত্ব ন্যাস্ত করেছিলো। বিশেষ করে জগৎশেঠ ঐ সময় বাংলার অর্থনীতির
গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠে। এছাড়া নবাবীর দায়িত্বে থাকা উমিচাদ ও তার পূত্র মুসলমানদের
টাকা নিয়ে ব্রিটিশদের সরবরাহ করতো। ইতিহাস বলে ঐ সময় মুসলমানদের ক্যাশ বাক্স তথা সিন্দুকের
চাবি থাকতো হিন্দুদের দায়িত্বেই। এ সম্পর্কে জগৎশেঠের একটি উক্তি আছে- “টাকা যা দিয়েছি (বাংলার পতনে ইংরেজদের সে টাকা দিতো), আরো
যত দরকার আমি আপনাদের (ইংরেজদের) দিয়ে যাবো, কোন চিন্তা নাই”। (তথ্যসূত্র: ইতিহাসের ইতিহাস, গোলাম আহমদ মোর্তজা, ২৩২)
ইতিহাস বলছে মুসলমানরদের সিন্দুকের চাবি যখন হি্ন্দুদের হাতে, তখন তা সত্যিই বিপদজনক।
এমনকি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমের জন্য মারাত্মক হুমকিও বটে। আসুন দেখে নেই,
বর্তমানে বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকগুলোর মূল মূল দায়িত্বরত ব্যক্তিদের মধ্যে কারা কারা
আছে---- বাংলাদেশ ব্যাংক ডিরেক্টর: সনাত কুমার সাহা, ডেপুটি গর্ভনর: শিতাংশু কুমার
সুর চৌধুরী এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর: ১) নির্মল চন্দ্র ভক্ত,২) শুভঙ্কর সাহা,৩) বিষ্ণু
পদ সাহা,৪) অশক কুমার দে,৫) সুধীর চন্দ্র দাস,৬) দাসগুপ্ত অসীম কুমার৭) গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী।
এছাড়া ঋণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর মহাব্যবস্থাপক হিসেবে রয়েছে- ১) অশোক কুমার
দে ২) দেব প্রসাদ দেবনাথ ৩) বিশ্বনাথ সরকার ৪) খগেস চন্দ্র দেবনাথ ৫) দেবাশীষ চক্রবর্তী৬)
সুকমল সিংহ চৌধুরী ৭) মিহির কান্তি চক্রবর্তী৮) শ্যামল কুমার দাস। **সোনালি ব্যাংক
: এমডি ও সিইও- প্রদীপ কুমার দত্ত বোর্ড অব ডিরেক্টর: ১) রঞ্জিত কুমার চক্রবর্তী, ২)
প্রদীপ কুমার দত্ত জিএম : ১) নেপাল চন্দ্র সাহা ২) পরিতোশ কুমার তারুয়া ৩) সুবাস চন্দ্র
দাস **রুপালি ব্যাংক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান : অমলেন্দু মুখার্জী, মহা ব্যবস্থাপক :
বিষ্ণু চন্দ্র সাহা ও উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক : দেবাশীষ চক্রবর্তী **অগ্রনী ব্যাংক
পরিচালক : বলরাম পোদ্দার ও জিএম: ১) জিএম পঙ্কজ রায় চৌধুরী ২) বাবুল কুমার সাহা **জনতা
ব্যাংক; পরিচালক- মানিক চন্দ্র দে **বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক; মহা-ব্যবস্থাপক: রোহিনী
কুমার পাল ও উপ মহা ব্যবস্থাপক : ঠাকুর দাশ কুন্ডু ও গান্ধী কুমার রায় **কর্মসংস্থান
ব্যাংক- মহাব্যবস্থাপক- গকুল চন্দ্র রায় সিরাজউদ্দৌল্লাহ ও তার সময়কার মুসলমানরা বুঝেনি
হিন্দুদের হাতে সিন্দুকের চাবি দিলে কত বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে, যে বোকামির ফল তারা
কিছুদিনের মধ্যেই পেয়েছিলো, হারিয়েছিলো নিজেদের স্বাধীনতা। বর্তমানেও বাংলাদেশের মুসলমানরা
একই ভুল করেছে, নিজেদের ব্যাংকের দায়িত্বগুলো তুলে দিয়েছে হিন্দুদের হাতে। ইতিহাসকে
ভাল করে লক্ষ্য করুন মীরজাফরের কথিত বিশ্বাসঘাতকতা নয়, বরং হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক
বিশ্বাসঘাতকতাই বাংলার পতনের মূল কারণ। তাই নির্দ্বিধায় বলতে পারেন, হিন্দুরা এক চরম
বিশ্বাসঘাতক জাতি বটে। কিন্তু এর ফল যে কতটা ভয়ানক হতে পারে তা অবুঝ মুসলমানরা চিন্তাও
করতে পারেনি। মুসলমানদের সিন্দুকের চাবি যখন হিন্দুদের হাতে, তখন দেশের স্বাধীনতা সত্যিই
সঙ্কটাপন্ন, হয়ত আধুনিকতা আর একুশ শতকে এসে আরেকটি পলাশীর প্রান্তর অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের
জন্য, দেখতে থাকুন....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন